In The Dark Of Illusion - 9 in Bengali Horror Stories by Utopian Mirror books and stories PDF | অবচেতনার অন্ধকারে - 9

Featured Books
  • चाळीतले दिवस - भाग 6

    चाळीतले दिवस भाग 6   पुण्यात शिकायला येण्यापूर्वी गावाकडून म...

  • रहस्य - 2

    सकाळ होताच हरी त्याच्या सासू च्या घरी निघून गेला सोनू कडे, न...

  • नियती - भाग 27

    भाग 27️मोहित म्हणाला..."पण मालक....."त्याला बोलण्याच्या अगोद...

  • बॅडकमांड

    बॅड कमाण्ड

    कमांड-डॉसमध्ये काम करताना गोपूची नजर फिरून फिरून...

  • मुक्त व्हायचंय मला - भाग ११

    मुक्त व्हायचंय मला भाग ११वामागील भागावरून पुढे…मालतीचं बोलणं...

Categories
Share

অবচেতনার অন্ধকারে - 9

তখন হেনরির ঘরে দপ দপ করে জ্বলছে ড্রাগনের চোখে দুটি লাল আলো। হেনরি একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে ক্লারার চোখের দিকে। ক্লারাকে সে সম্মোহিত করবে, তার বিকৃত আত্মাকে নিজের ইচ্ছানুসারে চালিত করবে। কেননা আজ সকাল থেকে ক্লারা তার কথা মতো কাজ করতে গিয়ে অমনোযোগী হয়ে পড়েছে।

চার জোড়া চোখ পরস্পরকে লেহন করতে চায়। এখন চলেছে ক্লারা আর হেনরির ইচ্ছা শক্তির লড়াই। অনেক্ষন একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার পর চোখের পলক ফেলে দেয় ক্লারা। তখনি জয়ের আনন্দে উল্লসিত হয়ে নেচে ওঠে হেনরির মন। সে চিৎকার করে স্তব্ধ বাতাসে ঘূর্ণন তুলে বলতে থাকে ---- ক্লারা, ক্লারা, তুমি হেরে গেলে, তুমি মানবী, পুরুষের অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে তোমার পরাজয় হবেই।

ক্লারা নতমুখে বসে আছে। ঘরে কোনো আলো নেই। আলো থাকলে দেখা যেত যে ক্লারার দেহের কোথাও এতটুকু আবরণ নেই। পোশাক হলো আত্মার অপমান। এবার হেনরি তার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আর তৃতীয় নয়নের সাহায্যে ক্লারার আন্দোলিত সত্তাকে অনুগত করবে।

পাশে শোয়ানো আছে একটি ঘন কালো বেড়াল, তাকে হত্যা করে হেনরি আত্মার ওজন নিয়ে গবেষণা করবে। সে ক্লারার হাতে তুলে দিলো একটি তীক্ষ্ণ ছুরিকা।

তারপর গম্ভীর কণ্ঠে আদেশ করে ---- আমার চোখের দিকে তাকাও।

চেতনাহীন জড়ের মতো ক্লারা চেয়ে দেখলো তার চোখের দিকে। সেই চোখের দৃষ্টি ভাষাহীন পলক পড়ছে না। যেন পাথরের স্ট্যাচু তাকিয়ে আছে।

---- উঠে দাড়াও।

পাতাল ঘরে কেঁপে ওঠে গুমগুম শব্দ।

স্বপ্নোত্থিতের মতো উঠে দাঁড়ায় ক্লারা। তার দেহের কোথাও এতটুকু বাড়তি মেদ নেই। এখন সে সম্পূর্ণ নগ্না। কিন্তু তাকে দেখে হেনরির মনের কোথাও ছোবল মারছে না লালসার পাপ।

কেননা ক্লারাকে দেখে মনে হচ্ছে সে যেন মিশরীদের প্রাচীন দেবতা আনুবিস। অগণিত শতাব্দী ধরে তার বিহ্বল দুটি আঁখি অন্ধকারে চেয়ে আছে। সহস্র যুগের ধূলিকণা জমে উঠেছে তার পাথরের ভ্রু ভাঁজে। ক্ষুধার্ত কুকুরের মতো তার মূর্তি কোথাও কোথাও ভেঙে পড়েছে।

কিন্তু মূর্তির পাথরের ঠোঁট দুটো এখনো কুকুরের মতো দাঁত বের করে দুর্বোধ্য, রহস্যময় হাসিতে কুঁকড়ে আছে।

হটাৎ দেখলে মনে হবে পাথুরে মূর্তিটা যেন চেয়ে আছে। যেন ছায়া ঘন শতাব্দীর পর শতাব্দীর অপসৃয়মান শোভাযাত্রা দেখছে। এবং নিহত শতাব্দীর সঙ্গে বিদায় নিয়েছে প্রাচীন মিশরের দীপ্তি ও উজ্জ্বলতা এবং প্রাচীন মিশরের দেবতারা। হয়তো তাই সে দাঁত বার করে জাগছে। পুরোনো দিনের জাকজমক, নিশ্চল, অসার ও বিনষ্ট গৌরবের স্মৃতি তার হাসি আনে।

মৃত্যু এখানে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। যে ছায়া ঢাকা পাতাল পথের ভেতরে মূর্তিটা দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে মৃত্যুর প্রেতারত ছায়া। মমীভুত মৃতদেহের সবাধারের আড়ালে লুকিয়ে আছে মৃত্যু। পাথুরে মেঘের ধুলোর আড়ালেও মৃত্যু দিন গুনছে।

মৃত্যু এবং অন্ধকার ----- যে অন্ধকারকে গত তিন হাজার বছর আলো ছুঁতে পারেনি।

কিন্তু আজ সেই হাজার বছরের অন্ধকারের মধ্যে তাকিয়ে থাকা শৃগাল দেবী আনুবিসের চোখে আলো এসেছে। সেই আলো তার পদচিহ্ন এঁকেছে স্পর্শ কাঞ্চনের শব্দের মধ্যে। সে শব্দ পাতাল পথের শেষে মরচে ধরা লোহার দরজার ওপর অশান্ত তরঙ্গের মতো আছড়ে পড়েছে।

...........তাকিয়ে আছে ক্লারা ..............। দপদপ করে জ্বলছে ড্রাগনের চোখ ...........জ্বলছে আবার নিভছে .......

সামনে ঘন কালো পোশাকে ঢাকা হেনরির দেহের কোথাও এক বিন্দু মানবিক আবেদন নেই। সে যেন কোনো অজানা মন্ত্রশক্তিতে শক্তিমান হয়ে উলঙ্গ ওই রমণীকে হাত ধরে শেখাবে প্রেতাত্মার বর্ণমালা। তাকে বিশ্বাস করাবে যে নরনারীর প্রেম হলো কুয়াশার মতো বিলীয়মান, মরা পাতার মতো অর্থহীন ..........।

সেই প্রেম মানুষকে আরো বেশি সার্থান্নেষী এবং দুর্বল করে তোলে।

রাতের পর রাত বিছানাতে ঝড় তুলে যে সহবাস, তার মধ্যে ঘুমিয়ে আছে বিবর্ণ আনন্দ। সেই অবুঝ মানুষকে পাতালের দিকে আকর্ষিত করে, তার হৃদয়কে উন্মোচিত করে না।

ক্লারা তাকিয়ে আছে .......।

যেন আনুবিসের মুখের ওপর তিন হাজার বছর পরে প্রথম আলো পড়লো।

শেষবার আলো জ্বলেছিল বাস্টের মিশরীয় পুরোহিতের হাতে পবিত্র দীপবর্তীকা। শেষবার ধুলোর ছাপ রেখেছিলো মিশরীয় পাদুকায় তাজা মানুষের পা। শেষবার কথা বলেছিলো নীল নদের দেশের প্রার্থনার ভাষায় সেদিনের মানুষ।

ড্রাগনের চোখে জ্বলা লাল আলোতে দেখা গেলো লোকটিকে। লম্বা, রোগা। ওর কাঁপা কাঁপা হাতে ধরা প্যাপিরাসের শুকনো পাতায় লেখা প্রাচীন পুঁথির মতো ওর মুখেও অজস্র ভাঁজ। ওর মাথায় সাদা চুল, বসা চোখ এবং হলুদ হয়ে আসা চামড়া দেখে বোঝা যাচ্ছে, লোকটা বুড়ো হয়েছে। কিন্তু ওর পাতলা ঠোঁটের হাসিতে যৌবনের দম্ভ।

কে সেই লোকটি ?

সে হলো হেনরি, এই মুহূর্তে তার যৌবনের লালিত্ব হারিয়ে গেছে কৃত্তিম আরোপিত বার্ধককের আবরণে। এটাই হয়তো তার আসল চেহারা।

সে মুখটা আমরা সবাই চিনি সেটা হলো তার মুখোশ। ক্লারার মূর্তির দিকে তাকিয়ে বৃদ্ধ হেনরির চোখে ফুটে ওঠে ভয়। পাতাল পথের আবছা আলোয় অসীম ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শৃগাল দেবতা। জল হাওয়ায় ক্ষয়ে যাওয়া তার অতিকায় পাথুরে শরীরে এখন পুরোনো দিনের জমকালো আড়ম্বর এবং যুক্তিহীন বিভীষিকার রেশ জড়ানো।

কিন্তু এ তো পাতাল ঘর নয়। শহর নিউ ইয়র্কের একুশ তলার একটি ঘর।

কেন সেখানে ছুটে আসে, বার বার ছুটে আসে, নিহত শতাব্দীর প্রেত ?

সে ভয় দেখায়। তার দাঁত দেখা যায়, তার চোখ দেখা যায়।