JIJIBISHA (JJ BISHA) in Bengali Poems by Samir Sinha books and stories PDF | JIJIBISHA (জিজিবিষা)

Featured Books
Categories
Share

JIJIBISHA (জিজিবিষা)

জিজীবিষা

দেওয়ালের ফাটলে ঝুলন্ত নগ্ন অশ্বথের সেকি,

নিদারুণ আস্ফালন!

রস চাই! রস চাই!

চাই আর রস.....

শেকড় চালিয়ে যাচ্ছে অমৃতের সন্ধানে,

এক কনা রস প্রতি মুহূর্তে রসদ যোগায বাঁচার!

দিন দিন প্রতি দিন চলে জিজীবিষার অমোঘ প্রয়াস,

কত ঝড়, কত সহস্র প্রতিকূলতা মনে করিয়ে দেয়...

বাঁচার স্বার্থকতা !

যখন শিশির কনায় ভেজা রৌদ্র্রর ঽতে চায় মন,

আর সবুজ কনায় ভরে ওঠে স্পন...

তখন কোন এক স্বন্ধি্খনে জীবন খুজে নেয় তার বেঁচে থাকার রস......

প্রতি মুহূর্তে হাজারো ঘটনা ঘটে চলে,

অবিরাম অবিরত

বাঁচা মরার কঠিন সংগ্রামে বাঁচার রস শুকিয়ে পাথর হয়ে গেছে,

চারিদিকে শুধু মরুভূমি আর মরুভূমি....

তখনই মন রোমন্থন করে ওঠে,

রস চাই! রস চাই!

বাঁচার রসদ রস চাই ।।

সমীর সিন্ হা

সমাজ ও জঞ্জাল

'জঞ্জালের স্তূপে মুক ডেকে যায়'...

বার বার নগ্ন সত্যির সম্মুখীন মন,

ঠিক কি ভাবে, স্বার্থান্বেষী কর্কট রোগ হৃদয়ে বাসা বাঁধে বুঝি না!

শুধু নিজের পরিবার, নিজের সংসার

আর চায়ের চুমুকে বিশ্বায়নের স্বাদ!

আর

জালনা দিয়ে সন্তর্পণে ফেলে দেওয়া জঞ্জালের নমুনায় কেটে যায় দিন দিন প্রতিদিন ।

শহীদ মিনার কিংবা হাসপাতালে পানপিকের নিদারুণ চিত্র কলায় উজ্জীবিত হয় সংস্কৃতি,

চায়ের ঠেকে মেরুদণ্ডহীন প্রানীদের উল্লাস,

পরচর্চা, পরনিন্দা আর 'ভোট দেবেন কোনখানে' ? সীমাবদ্ধ,

সরকারি হাসপাতাল কিংবা স্কুলের আঙিনায় প্রবেশে মন 'নিউমোনিয়ায়' আকান্ত হয়ে ওঠে,

'জঞ্জালের স্তূপে মুক ডেকে যায়'...

হঠাৎ! সরকারি চাকরির খবরের ঘন্টায় মন সরগরম হয়ে ওঠে!

তখনই! পরিবেশ দূষণ- শৈল্পিক ভাবনা আর জঞ্জালের স্তূপ- রক গার্ডেন বলে মনে হয়,

পৃথিবীর সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রানী যেখানে আদিম,

পরিবেশ বাঁচাও অভিযান তেমনি অর্থহীন' সাহেব - বিবি-গোলাম'

সবকিছুই একদিন শেষ হয় নুতন ভাবে শুরুর জন্য

চোখ ঝাপসা হয়ে আসে,

'জঞ্জালের স্তূপে মুক ডেকে যায়'... ।।

সমীর সিন্ হা

ছুট- ছুট দেয় মন ছুট

'ছুট - ছুট দেয় মন ছুট' সেই রাস্তার মোড়ে...

যেখানে এক চিলতে রৌদ্রর দেয় উঁকি।

মন ঘড়িতে দেয় দম,

ভেসে যেতে চায় মন দুর দিগন্তের পারে...

যেখানে প্রান শ্বাস নিতে পারে মন খুলে,

হিসাব নিকাশে জেরবার মন - প্রাণ

একটু উত্তাপ চায়' নিথর' শরীর,

যেখানে প্রান নেই শরীর আছে আকাশে,

লোভ হিংসা প্রতি হিংসায় যেখানে পরিবেশ কলুষিত;

নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়!

ফুসফুসের খাঁচায় চড়ে নিকটিনের প্রলেপ।

শৈশবের সাফল্যের ঘেরাটোপে প্রান যেখানে অষ্ঠাগত,

প্রজাতির পাখনার আওয়াজ যেখানে শিহরিত করে না 'মনপ্রান...

প্রতি - নিয়ত অভিযোজনের খেলায় মন মাতোয়ারা ।

দু-দন্ড হারিয়ে খোঁজে রৌদ্দুর

সবুজের মাঝে হারিয়ে যেতে নেই মানা,

'ছুট - ছুট' দেয় মন ছুট সেই রাস্তার মোড়ে'.....

সমীর সিন্ হা

চোখেতে - ঘুম

'চোখ বুজে আসে তবু ঘুম আসে না' ..

মন ছুটে বেড়ায় কল্পনায় এলোমেলো ভাবে

শরীরে বাসাবাঁধে কঠীন অসুখ,

দেহ আর সাথ দেয় না।

পরিবেশ অসহনীয় - 'মন ভালো নেই'

'মন ভালো নেই' ।

প্রতিদিন রাতে কান পেতে শুনি সমাজের হৃৎস্পন্দন

' ধুক -' ধুক -' ধুক -' ধুক

প্রতি দিন শুরু হয় জিজিবিসার অমোঘ খেলায়,

ভোরের সিন্ধতা গায়ে আগুনের ছোঁয়া লাগায়...

রাতের আকাশে তারার মেলায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়,

'বিশ্বাস এখন অবিশ্বাসের ভারে পথ- ভষ্ট পথিক,

অভিযোজনের খেলায় মাতোয়ারা মাংস পেশিতে এখন টান পড়ে :হাঁটতে কষ্ট হয়

তবু মন ছুটে বেড়ায় কল্পনায় এলোমেলো ভাবে:

'চোখ বুজে আসে তবু ঘুম আসে না'....ll

সমীর সিন্ হা

অতি - সাধারণ

আর 'ক-দিন পরে' দূর্গা পুজো......

দেবী মার আগমনীতে আকাশ বাতাস মুখরিত!

যখন, সবাই ব্যস্ত শেষ সময়ের কেনাকাটার,

দেখি, 'ছেলেটা' অতি কষ্টে কচি হাতে ক্ষয়ে যাওয়া

সাবান সযত্নে শতছিন্ন লুটিতে লাগিয়ে, জীবন নামক আশার বাক রুদ্ধ করে,

বাসন মেজে চলে.....

জীবনের সাধারণ ঘটনায় কারও কোন ভুক্ষেপ নেই,

সব্বার একই উত্তর 'যেমন কর্ম তেমন ফল',

জানেন, ভট্টাচার্য বাবু.... এ সবই কর্ম ফল।

প্রতি মুহূর্তে কত সহস্র ঘটনা ঘটে যায়.... তার খবর কেই- বা রাখে,

কি' বা দরকার সাধারণ ব্যাপারে মস্তিষ্কে জোর দেওয়ার,

ব্যাপারটা একে বারে জলের মত সচ্ছ,

নিজেদের' ব্যাপারে আটিসুঁটি অন্যের ব্যাপারে কৌতুহলী ।

এইভাবেই, কাল সমুদ্রের ঢেউ বহিয়া যায় তার আপন ছন্দে,

'ছেলেটা' এক ' আগমনী' থেকে আগামী 'আগমনী' পর্যন্ত্য.... বাসন মেজে চলে সেই একই ভাবে ।

মনের মধ্যে নিদারুণ ঝড় ওঠে....

পারেনা, 'ছেলেটা' একটা ঝড় তুলতে যে ঝড়ে!

সমস্ত সমাজের রঙ মিলে মিশে একাকার করে দেবে,

সৃষ্টি হবে এক রঙহীন নূতন ক্যানভাস,

যেখানে 'ছেলেটা' আশার তুলি হাতে, মায়া মমতার রঙ নিয়ে নিজেদের স্বপ্নের ছবি আঁকবে ।

তবেই' তো' সৃষ্টি হবে নূতন প্রজন্মের ইতিহাস,

জানেন, আমারা যে অতি সাধারন......

সমীর সিন্ হা

টানা - পোড়ন

যা - চাই তা পাই না, যা - পাই তা চাই না : কেন এই বিভেদ 'চাওয়া - পাওয়ার',

কি চেয়েছি, এই জীবনে তেমন কিছু মনে পড়ে না !

শৈশবে : 'দু' চামচে বেশি হরলিকস আর কিছু বায়না ।

যৌবনে : একটু ভালো ভাবে থাকা আর একটা ভালো চাকরি ।

ব্যাস, এতেই বাংলার শিল্প বিপর্যয়! আমাদের দাবি, মানতে হবে নইলে গদি ছাড়তে হবে।

কোন এক অসতর্ক মুহূর্তে চেয়েছিলাম 'ভালো ভাবে বাঁচতে আর 'ভালো - বাসতে,

ব্যাস তাতেই টানাপোড়েন, ' কভী খুশি কভি গম্' ।

এখন সত্যি নিজেকে ইংগিত করে প্রশ্ন করি -

আমি সবার মাঝে কি খুঁজি?

-`বিবিধের মাঝে দেখ মিলনও মহান` । ' না'

দড়ি, ধরে মারো টান রাজা হবে খান খান.....

বোধহয়, উত্তর-টা জানা নেই তবে!

একটা উওর এখন বুঝি...

সবার মাঝে নিজেকে খোঁজা

কিংবা সব্বাইকে নিয়ে এক সারিতে চলার নাম 'বোধহয় পাগলামি ।

এ যুগে কেউই, নিজেকে কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী, হতে দিতে চায় না,

তুমি আমি ভাই - ভাই বাকি সব সৎ ভাই,

আমার সবাই ঐ - একই পথের পথিক।

কিন্তু, এভাবে আর কতদিন চলবে সবাইকে বুঝতে হবে!

এতো! ঠিক ওর ও প্রান আছে, মনও আছে ও উত্তেজনায় সাড়া দেয় আর ও কাওকে কথা দিতে পারে,

'মান' - অভিমান করতে পারে,

তাই, কষ্ট হলেও ডাক দিয়ে উঠতে হয়,

'পথিক' তুমি কি পথ হারিয়েছে!

ওঠ' আমাকে অনুসরণ কর....... ।। সমীর সিন্ হা

আমি মুক্তি

আমি মুক্তি, জীবনের পথে 'সত্তর' বছর অবিরত হেঁটে চলা এক ক্লান্ত 'পথিক'.....

জীবনের শেষ, সন্ধিক্ষণে দণ্ডায়মান আপাত হেরেযাওয়া এক কলঙ্কিত চরিত্র ।

যে, জীবনের ব্যালেন্স শীটে কিছু' বেক্তিগত- তথ্য' দাখিল করে আর মেলাতে পারে নি,

গল্প শুরু করেও, শেষ করতে পারেনি....

মানুষ হয়েও যে, 'মা-ন-হু-শ' হতে পারেনি,

আমি, জীবন ইতিহাসে এমনই এক চরিত্র ।

এখন অজান্তে নিজেকে প্রশ্ন করি আচ্ছা

আমি কি মানুষ?

শুধু দুই হাত, দুই পা, রক্ত মাংস, ভাল পোষাক , উচ্ছাসা, প্রতিপত্তি এটাই কি মানুষ হওয়া ।

শুধু 'চাওয়া - পাওয়া' : 'নেওয়া - দেওয়া' এটাই কি জীবন!

জানেন, আমারাও একটা পরিবার ছিল কিন্তু ঐ পর্যন্তই, এতে না ছিল আত্মিক টান না ছিল অনুভূতি

- শুধু মেকি স্টেটাসস্ এর তকমা আঁটা ' ক্ষয়- রোগগ্রস্ত' কঙ্কাল কাঠামো,

- যাতে না ছিল 'প্রান না ছিল 'স্পন্দন ।

জানেন, ছেলেকে বিদেশে পাঠালাম !

মানুষ হওয়ার জন্য, যে কিনা আমার শেষ জীবনের অবলম্বন 'সাত রাজার ধন এক মানিক'

কিন্তু হায়! কি নিষ্ঠুর এ নিয়তি !

ও এখন সেন্ট্রাল জেলের কয়দি নম্বর- 'ওয়ান'

অন্ধকার জগৎে ডনদের সঙ্গে যার নিত্য সহবাস,

এও কি কম প্রাপ্তি ; ' স্ত্রী এখন' পর- স্ত্রী ।

সত্যি, আমি এখন মৃত্যুঞয় হয়ে তারস্বরে চিৎকার করে বলছি 'ভগবান' টাকা চাই না, মান চাই না, প্রতিপত্তি চাই না.....

চাই, অভাগীর ছেলে হয়ে, মা - 'এর শেষ ইচ্ছা মেটাতে,

' ধূয়ো ' হয়ে গগনে মিশতে..... ।।

সমীর সিন্ হা