জলের ওপারে

(9)
  • 52.9k
  • 0
  • 19k

গল্পের নায়ক কিন্জান, শৈশবকালে অবাক চোখে নায়াগ্রার জলপ্রপাতটির দিকে তাকিয়ে থাকত। বিশাল জলপ্রপাত তাকে জাদুর মতো মুগ্ধ করেছিল। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সে মনস্থ করেছে যে একদিন সেই বিশাল জলপ্রপাতটি অতিক্রম করবে। এটাই তার একমাত্র স্বপ্ন হয়ে উঠল। কিন্তু জেনে মা রাস্বী খুব ভয় পেয়েছিল কারণ এই খেলায় পুত্রের মৃত্যু নিশ্চিত ছিল। ছেলের জিদ দেখে মা তাঁর সাহসী পুত্র কিন্জানকে নদীর তীব্র জলের মধ্যে পড়তে রোধ করতে, সমস্ত কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। রাস্বী কি নায়াগ্রা জলপ্রপাতটি অতিক্রম করার ছেলের আবেগকে আটকাতে পেরেছিলেন? কিন্জান কি তার স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন? এটি জানতে আপনাকে এই উপন্যাসটি পড়তে হবে।

Full Novel

1

জলের ওপারে - 1

গল্পের নায়ক কিন্জান, শৈশবকালে অবাক চোখে নায়াগ্রার জলপ্রপাতটির দিকে তাকিয়ে থাকত। বিশাল জলপ্রপাত তাকে জাদুর মতো মুগ্ধ করেছিল। বয়স সাথে সাথে সে মনস্থ করেছে যে একদিন সেই বিশাল জলপ্রপাতটি অতিক্রম করবে। এটাই তার একমাত্র স্বপ্ন হয়ে উঠল। কিন্তু জেনে মা রাস্বী খুব ভয় পেয়েছিল কারণ এই খেলায় পুত্রের মৃত্যু নিশ্চিত ছিল। ছেলের জিদ দেখে মা তাঁর সাহসী পুত্র কিন্জানকে নদীর তীব্র জলের মধ্যে পড়তে রোধ করতে, সমস্ত কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। রাস্বী কি নায়াগ্রা জলপ্রপাতটি অতিক্রম করার ছেলের আবেগকে আটকাতে পেরেছিলেন? কিন্জান কি তার স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন? এটি জানতে আপনাকে এই উপন্যাসটি পড়তে হবে। ...Read More

2

জলের ওপারে - 2

দুই দাদুর মুখ থেকে সোমালিয়ায় কিন্জানের গল্প শুনে সবাই অবাক হয়ে গেল।খুব কম বয়স থেকেইকিন্জান মনোযোগ দিয়ে নায়াগ্রা জলপ্রপাতদেখত। বা টিভির স্ক্রিন দেখার সময়বাচ্চারা যেমন চেতনা হারায়, সে এই বিশালাকার জলপ্রপাতের দিকে তাকিয়ে থাকতো।ভিজে সিলভার স্ক্রিনেরমতো,জলের অসীম চাদরটি ছেলেটিকে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে সে পুরো বিশ্বকে ভুলে গিয়েছিল।এমনকি যখন আমেরিকান সেনাবাহিনীতে সৈনিক,তার পিতার মৃত্যুর সংবাদ পেয়েওরাসবি সে সেখানে কয়েক ঘন্টা বসে থাকার স্বাভাবিক অভ্যাস ত্যাগ করেনি। কিন্জানের মা রাস্বী চেয়েছিলেন তার ছেলে সেনাবাহিনীতে যোগ দিক। যদিও সে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চায়নি, পনের বছর বয়সী ছেলে তার মা তাকে যা করতে বলেছিল তাই করেছিল। একজন ব্যক্তি অন্যের কথা শুনে কোনও ...Read More

3

জলের ওপারে - 3

তিন রাত আরো গভীর হয়ে চলেছে। বাচ্চাদের বাবা-মা অবাক!সাধারণত যে বাচ্চারা খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে তারা গল্পটিতে এতটাই ক্ষিপ্ত যে বুঝতেই পারেনি, দুপুর থেকে সন্ধ্যা,আবার সন্ধ্যা থেকে রাত হয়ে গেল! সকলেই কিন্জানের গল্পের শেষটি জানতে এতোটাই আগ্রহী ছিল যে তারা তাদের ক্ষুধা ও তৃষ্ণা ভুলে গিয়েছিল। কিছুদিন আগেই বাচ্চারা ও তাদের বাবা-মা বাফেলো শহরের সেই জায়গাগুলি দেখেছিল, তাই তারা অনুভব করছিল, যেন তাদের মাঝেই ইতিমধ্যে কিছু ঘটেছে। গল্পের এই বিরতির পর, দাদু নিজেই বুঝতে পেরেছিলেন যে তার অতিথিরা দুপুরের পর থেকে কিছু খায়নি। দুই বোন, যারা এই ভারতীয় পরিবারকে দাদুর কাছে রেখে তাদের ফ্ল্যাটে গিয়েছিল, দরজা খুলে একটি বড় ...Read More

4

জলের ওপারে - 4

চার কিন্জানের মা রাস্বী মূলত ভারতবর্ষের। তিনি জয়সালমেরের কাছে খুব ছোট একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রাস্বীতার জীবনের প্রথম চার কখনও চাঁদ দেখেনি। এমনকি তারকারা কী তা তিনি জানতেন না। জীবনের প্রথম চার বছর রাসবি ফুল, গাছ এমনকি পাখিও দেখেন নি।বালু ওবালুরচারপাশে একটি উঁচু পাথরের প্রাচীর, এবং আকাশ থেকে আসে সূর্যের আলোকেবল তাঁর জীবন। তার মা এই সূর্যের আলোতে অন্য মহিলাদের সাথে চাকি পিসতেন, কখনও কাপড় বোনা, কখনও বাঁশের ঝুড়ি তৈরি করতেন, কখনও পাথর ভাঙ্গতেন। কাজের মাঝেই মাপেঁয়াজ, চাটনি বা কিছু ডালের সাথে শুকনো চারটি মোটা মোটা রুটি পেতেন। মা সে রুটিনিজেখেতেনএবং তার কিছুটাছোট রাস্বীকে দিতেন,যার নাম তখন রাসবালা,রাস্বী নয়।রসবালার ...Read More

5

জলের ওপারে - 5

পাঁচ সেদিন ওয়াশিংটনের রোদ কিছুটা নরম ছিল। যেখানে দিন শুরু হয় রাত নয়টায়,কিছু কুয়াশাচ্ছন্ন মেঘ তাড়াতাড়ি সন্ধ্যা নিয়ে এলো। হাউসের সামনে লম্বা লনে মানুষের হাঁটাচলা প্রতিদিনের মতোই মনোরম ছিল। একদিকে যুবক ও শিশুদের বৃত্ত দেখে মনে হয়েছিল কেবল চলাচলের মেলা। লোকেরা দেখছিল, এই ছোট্ট ব্রাজিলিয়ান কুকুরছানা যে লোকের বৃত্তে,ঘুরে ঘুরে নাচছিল।সম্ভবত কেউ তাকে মদ খাইয়ে দিয়েছিল। সে এমন উন্মত্ততায় নাচছিল যে তার গলায় বাঁধা সোনার স্কার্ফ একটি পতাকার মতো বাতাসে দুলছিল। শুধু বাচ্চারা নয়, ছোট্ট কুকুরের মালকিন মোম গ্রেটা এবং নিউ ইয়র্ক থেকে আসা তার বন্ধুও হাততালি দিচ্ছিল। একটু দূরে দাঁড়িয়ে একজন ফটোগ্রাফার এই অনন্য দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধরা শুরু ...Read More

6

জলের ওপারে - 6

অধ্যায় 6 এটি একটি পরিবর্তিত ঋতু ছিল।খুব শীত ছিল। বফেলোর তাপমাত্রা শূন্যের নীচে চলে গেছে, ঠিক তেমনই,যেমন ভারতের ধাপকুয়োয় জল আনতে বাঁকা সিঁড়ি দিয়ে ধাপে ধাপে নীচে নেমে যায়।পৃথিবীর গর্ভে যত পা ধসে যাচ্ছে শীতলতা বাড়তে থাকে। নদী-হ্রদ সেখানে বরফের আবরণে আবৃত ছিল। বরফের মার্জিত শুভ্রতা, সবুজ পাতার সুর ফিকে করে দিয়েছে।গাছ অনেক রূপ ধারণ করেছে। আকাশ জল নয়, বরফ দিয়ে পৃথিবীর সেবা করছিল।রাস্তায় খুব কম যাযাবর ছিল। সাহসী পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। রাতের খাবার শেষে, কিন্জান এবং পেরিনা ডেলাকে তার ঘরে পাঠিয়ে একটি ছোট কাগজের ব্যাগ নিয়ে বিছানায় বসে। এই ব্যাগে বিভিন্ন ধরণের পান্না ছিল।এই পান্না পেরিনার খুব প্রিয়। ...Read More

7

জলের ওপারে - 7

সাত সানা ও সিলভা দুজনেই খুব উত্সাহী ছিল। তাদের মন তাদের বয়সের চেয়ে এগিয়ে ছিল। তবে পড়ার চেয়েও তাদের ইচ্ছা ছিল, বিশ্বকে দেখা। যখনই তারা ঘোরাঘুরি করার সুযোগ পায়, ছাড়ে না। দুজনেরই প্রথম পছন্দ ছিল জল। নদী, সমুদ্র, পুকুর এবং হ্রদ তাদের প্রিয় জায়গা। গত শনিবার এশিয়া থেকে আসা পপ-স্টারের লাইভ শো দেখার পর থেকে তাদেরকে বেশ কয়েকবার চাপা স্বরে গান করতে শোনা গিয়েছিল। “কখনও পাথরে জল, কখনও মাটিতে জল... কখনও আকাশে জল, কখনও পৃথিবীতে জল... দুরে পৃথিবীর তলদেশে, একটু তৃষ্ণা লুকিয়ে আছে, সবার নজর বাঁচিয়ে জল সেখানেই যায়..” সত্যিই জলের অস্থিরতাও অদ্ভুত, নৌকা এতে সাঁতার কাটে, এতে ...Read More

8

জলের ওপারে - 8 - Last Part

আট প্রত্যেকে খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিল... যখন দাদু এই গল্পটি শেষ করলোন। এটি ছিল নিত্য নিয়ম, রাতের খাবার শেষে বাচ্চা দাদুর কাছে বসত। এই গল্পটি প্রবাহিত জলপ্রপাতের মতো, ফিল্মের দৃশ্যে যেমন ঘটে থাকে ঠিক তেমন, মানস-নহরে খড়ের মতো বইতে শুরু করত। কখনও থেমে, কখনও দৌড়ে, কখনও ডুবে উঠে আগে বাড়ত। বাচ্চাদের মা-বাবাও দাঁতে আঙুল চেপে এই দীর্ঘ গল্পটি শুনেছিলেন। এই গল্পটির সবচেয়ে বড় লাভ হল, শিশুদের মন থেকে 'আত্মার' ভয়টি কেটে গেছে যারা কিছু দিন আগে অদ্ভুত ঘটনায় আতঙ্কে ঘিরে ছিল।তারা বুঝতে পেরেছিল যে আত্মা নিজেই একটি নিরীহ প্রাণ, কেবল তার দুঃখ এবং ব্যর্থতায় নিমগ্ন। সে কি কারও ক্ষতি ...Read More